আজ শনিবার, ১৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ছাত্রলীগ ক্যাডার খান মাসুদের বিচার বহিস্কার দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান মাসুদকে ‘সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, হত্যকারী’ আখ্যায়িত করে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করছে দাবি করে দল থেকে বহিস্কারের জন্যও দাবি জানান তারা।

৩১ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে শহরের চাষাঢ়ায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বন্দর থানা ছাত্রলীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক শেখ মাঈনদ্দিন মাঈনু, ছাত্রলীগ নেতা দোলন হাসান, অনিক হাসান ও রায়হানের উপর হামলার প্রতিবাদে খান মাসুদ ও তার সহযোগিদের গ্রেফতার দাবিতে বন্দরবাসীর ব্যানারে ওই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

বক্তারা বলেন, ‘বন্দরের দুধর্ষ সন্ত্রাসী, মাদক স¤্রাট, চাঁদাবাজ, অস্ত্র মামলার আসামী, পুলিশকে মারধর, নারী ও মানব পাচার, গুম, মাদক সহ একাধিক মামলার আসামী কুখ্যাত সন্ত্রাসী খাঁন মাসুদ ও তার সহযোগি পাতলা রাজু, ডালিম, শান্ত, নূরুজ্জামান, সুজন, সোহাগ, আলামিন, নয়ন, ইমরান, সাদ্দাম সহ সকল সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন করা হবে।’

বন্দর ছাত্রলীগ নেতা দোলন হাসান বলেন, ‘ছাত্রলীগের মতো স্বনামধন্য একটি সংগঠনকে কলুষিত করছে খান মাসুদ। সে কোন ছাত্র না। বন্দরের একজন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। কেউ তার অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। হত্যার উদ্দেশ্যেই শেখ মাঈন উদ্দিন মাঈনু, অনিক, রায়হান সহ আমাদের উপর হামলা করেছে। কি দুর্ভাগ্য আমাদের দল ক্ষমতায় কিন্তু থানায় সন্ত্রাসী খান মাসুদের বিরুদ্ধে মামলা নেয় না। উল্টো ভালো মানুষদের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।’

অনিক হাসান বলেন, ‘একের পর এক হামলা করে যাচ্ছে। কিন্তু বিচার হয় না। থানা কোন মামলা নেয় না। মাদক সন্ত্রাসের রাজনীতি করতে চাই না। সুষ্ঠু রাজনীতি করতে চাই। অবিলম্বে খান মাসুদের বিরুদ্ধে দলীয় ও আইনগত ব্যবস্থা না নিলে কঠোর আন্দোলন করা হবে।

বন্দর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শামসুল আলম বলেন, ‘বন্দর খেয়াঘাটে অটোরিকশার স্ট্যান্ড, বাজার বসিয়ে চাঁদা নিচ্ছে। তার বাহিনী দিয়ে মাদক বিক্রি করে। পুলিশকে মেরে অস্ত্র লুট করেছে তারপরও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কঠোর আন্দোলন করা হবে।’

বন্দর ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘লাঙ্গল মার্কা রাজনীতি করলে পুলিশ মামলা নিতো। আমার ভাতিজার রক্তের বিচার পাই না।’

উল্লেখ্য বন্দর থানা ছাত্রলীগের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক শেখ মাঈনদ্দিন মাঈনু ও সাংগঠনিক সম্পাদক খান মাসুদের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এতে করে ১৩ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে কুরুচিপূর্ণ লেখা নিয়ে মাঈনু গ্রুপের দোলন হাসানকে খান মাসুদের লোকেরা কুপিয়ে জখম করে। তার ধারাবাহিকতায় ১৫ অক্টোবর রাতে উপজেলার কৃষ্ণপুরা এলাকায় শেখ মাঈনদ্দিন মাঈনুকে কুপিয়ে জখম করে খান মাসুদের লোকেরা।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন,‘ওই ঘটনায় সোমবার একটি মামলা নেয়া হয়েছে। এর আগেও একটি মামলা নেয়া হয়েছে। সেহেতু মামলা না নেয়ার অভিযোগটি সত্য না।’

তিনি আরো বলেন, ‘খান মাসুদের বিরুদ্ধে অস্ত্র উদ্ধার, পুলিশের অস্ত্র লুট, মারামারি ও মাদক সহ ৭ থেকে ৮টি মামলা রয়েছে। নতুন দুইটি মামলায় তদন্ত চলছে।’